ডয়চে ভেলে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার বর্ষপূর্তির ঠিক আগে ওয়াশিংটন ও মস্কো নিজ নিজ অবস্থান জোরদার করতে যখন তর্জন–গর্জন চালাচ্ছে, তখন চীন এই সংকটের অবসানের লক্ষ্যে নিজস্ব কূটনৈতিক উদ্যোগ তুলে ধরার তোড়জোড় করছে। তবে রাশিয়ার সঙ্গে ‘সীমাহীন’ বন্ধুত্বের কারণে চীনের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। উল্লেখ্য, চীন এখনো ইউক্রেনের ওপর হামলার জন্য রাশিয়ার নিন্দা করেনি। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেও বারবার মস্কোর পাশে দাঁড়িয়েছে বেইজিং। এর মধ্যে চীন রাশিয়াকে অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে বলে যুক্তরাষ্ট্র সন্দেহ প্রকাশ করেছে। ফলে সম্ভাব্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে চীনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ বেইজিংকে ইতিমধ্যে এ বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে। চীন অবশ্য এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। উল্টো ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করে যুক্তরাষ্ট্র সংকট আরও তীব্র করে তুলছে বলে বেইজিং পাল্টা অভিযোগ করছে।
এদিকে ইউক্রেন সংকট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিন গাং সেই সঙ্গে কয়েকটি দেশের উদ্দেশে অবিলম্বে ‘আগুনে ঘি ঢালা’ বন্ধ করার ডাক দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার বেইজিংয়ে বিশ্ব নিরাপত্তা সম্মেলনে এক ভাষণে তিনি বলেন, চীন কোনো দেশের আধিপত্য ও চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরোধী। পশ্চিমা বিশ্ব তাইওয়ানের প্রশ্নে বারবার ইউক্রেনের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে চীনের ওপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, চীনের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা কঠিন হুমকির মুখে পড়ছে।
আজ প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ‘গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভ’ নামের একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করেছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাতে ‘অবিভাজ্য নিরাপত্তা’ নামের একটি ধারণার কথা উল্লেখ রয়েছে, যা রাশিয়াও অনুমোদন করে। সি চলতি সপ্তাহেই ইউক্রেন সংকটের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে এক ভাষণ দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। চীনা নেতৃত্ব ইউক্রেন সংকট অবসানের লক্ষে এক ‘রাজনৈতিক সমাধানসূত্র’ পেশ করার অঙ্গীকার করেছে। সেই প্রস্তাব ইউক্রেনসহ বাকি বিশ্বের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, সে বিষয়ে আগে থেকেই সংশয় দেখা দিচ্ছে।
এদিকে আজ মস্কো সফর করছেন চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই। ফ্রান্স, ইতালি, হাঙ্গেরি ও জার্মানি সফরের পর তিনি মস্কোয় সম্ভবত রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সোমবার চীন ও রাশিয়ার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। ইউক্রেন সংকটের বিষয়ে চীনের কূটনৈতিক উদ্যোগের প্রতি পুতিন সমর্থন জানাবেন, সে বিষয়ে কার্যত কোনো সংশয় দেখা যাচ্ছে না।
সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:ফেব্রুয়ারী ২১, ২০২৩
রেটিং করুনঃ ,