ইউক্রেন এখন বিজয়ের পথে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, ইউক্রেন একটি ‘বাঁকবদলের সন্ধিক্ষণে’ পৌঁছে গেছে এবং ‘বিজয়ের পথে’ রয়েছে। বিবিসি লাইভের খবরে এ তথ্য জানানো হয়।
টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে জেলেনস্কি বলেছেন, ‘আমাদের ইউক্রেনীয় ভূমিকে মুক্ত করতে কত দিন লাগবে, তা এখন বলা সম্ভব নয়। তবে এটা বলা সম্ভব যে আমরা তা করতে পারব। কারণ, আমরা ইতিমধ্যে কৌশলগতভাবে বাঁকবদলের সন্ধিক্ষণ পৌঁছে গেছি। আমরা বিজয়ের পথে আছি।’
জেলেনস্কি বলেন, এই যুদ্ধে ‘শক্তিশালী এবং একরোখা শত্রুর’ বিরুদ্ধে ‘দেশপ্রেমের যুদ্ধ’, যে শত্রুর নিজেদের হাজার হাজার সেনার মৃত্যুর বিষয়ে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।’
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে ভাড়াটে যোদ্ধা ব্যবহার করছে—এমন খবরের বিষয়টি উল্লেখ করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এখানে কামান, বোমা, ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এখন সিরিয়ার ভাড়াটে যোদ্ধারা রয়েছে, যারা এখানে কে কোন ভাষায় কথা বলে সেই পার্থক্য পর্যন্ত করতে পারে না। তাদের বিদেশি ভূমিতে আনা হয়েছে শুধু হত্যাযজ্ঞ চালাতে।’
রাতভর ইউক্রেনের নতুন নতুন শহরকে লক্ষ্য করে রাশিয়ার হামলার ব্যাপকতা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে জেলেনস্কি ইউরোপীয় ইউনিয়নকে তাদের (ইউক্রেন) আরও বেশি সহায়তা করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
জেলেনস্কি বলেন, ‘রাতে হামলাকারীরা জুতার কারখানায়, অনেকগুলো ফ্ল্যাট ও দিনিপ্রোর একটি নার্সারিতে বোমা হামলা করে। কিসের জন্য? এটি যদি চলতে থাকে, তাহলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যেই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তা যথেষ্ট নয়…আমরা আরও নিষেধাজ্ঞা আশা করছি। রাশিয়াকে এই ভয়াবহ যুদ্ধে মূল্য দিতে হবে।
রুশ সামরিক অভিযানের আজ শুক্রবার ১৬তম দিনে নতুন করে ইউক্রেনের তিন পশ্চিমাঞ্চলীয় শহরে হামলা হয়েছে। এত দিন পূর্বাঞ্চলীয় শহরগুলোতে হামলা হলেও পশ্চিমের শহরে হামলার ঘটনা এটিই প্রথম।
শুক্রবার ভোরে দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর লুতৎস্ক ও ইভানো ফ্রাঙ্কিভস্ক এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর দিনিপ্রোতে হামলা হয়েছে।
এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পূর্ব ইউক্রেনে রাশিয়ার হয়ে লড়াই করতে মধ্যপ্রাচ্য থেকে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের অনুমতি দিয়েছেন।
রাসায়নিক অস্ত্র কোথায় ছুড়বেন: জেলেনস্কি
যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ইউক্রেন রাসায়নিক অথবা জৈবিক অস্ত্র বানাচ্ছে, এমন অভিযোগ তুলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর এ অভিযোগের পাল্টা জবাব দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। খবর বিবিসির।
এক ভিডিও বার্তায় জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা রাসায়নিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি বলে অভিযোগ উঠেছে। এটা আমাকে সত্যিই চিন্তায় ফেলেছে। কারণ, আমি বারবারই দেখেছি, যদি রাশিয়ার পরিকল্পনা জানতে হয়, তাহলে রাশিয়া অন্যদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ তুলছে, সেদিকে নজর রাখতে হবে।’
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
রাসায়নিক হামলা চালানোর প্রস্তুতি নেওয়ার অভিযোগ কেন, রাশিয়ার দিকে এ প্রশ্ন ছুড়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আপনারা কি ইউক্রেনকে রাসায়নিক অস্ত্রমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন? আপনারা কি অ্যামোনিয়া ব্যবহার করছেন? ফসফরাস ব্যবহার করছেন? আপনারা আমাদের ওপর হামলার জন্য কী প্রস্তুতি নিয়েছেন? রাসায়নিক অস্ত্র কোথায় ব্যবহার করবেন?’
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ইউক্রেনের মাটিতে কোনো রাসায়নিক অথবা গণবিধ্বংসী অস্ত্র তৈরি হবে না।
জেলেনস্কি বলেন, স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার ইউক্রেন সরকারের সহায়তায় ৪০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী রুশ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত শহরগুলোতে খাদ্য, ওষুধসহ বিভিন্ন ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছে। তবে তিনি অভিযোগ করেন, মারিউপোল ও নিকটবর্তী ভলনোভাখা শহর পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ মার্চ ১১, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,