ইউক্রেন ছাড়ল ২০ লাখ মানুষ
মানবিক করিডর খুলে দিতে প্রস্তুত রাশিয়া, বেসামরিকেরা যাবেন পছন্দের জায়গায়।
রাশিয়ার হামলার জেরে ইউক্রেন ছেড়েছে ২০ লাখের বেশি মানুষ। জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডি যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম বিবিসিকে এই তথ্য জানিয়েছে।
ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে দলে দলে মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে পালাচ্ছে। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অল্প সময়ের ব্যবধানে এত শরণার্থীর ঢল এর আগে দেখেনি ইউরোপ।
এর আগে গ্রান্ডি বলেছিলেন, রুশ হামলা শুরুর পর প্রথম দফায় যারা ইউক্রেন ছেড়েছিল, তাদের সঙ্গে ‘কিছু সম্পদ ছিল’। অনেকে গাড়ি নিয়ে ইউক্রেন ছেড়েছে এবং তাদের অনেকে সঙ্গে ইউরোপে অন্য দেশগুলোয় অবস্থানরত অনেকের যোগাযোগ ছিল। ফলে তারা তাদের পরিবার, বন্ধু, তাদের পরিচিতজনদের কাছে যেতে পেরেছে। তবে তিনি সতর্ক করে এ-ও বলেছেন, কিন্তু এই সংঘাত যদি দীর্ঘদিন ধরে চলে, তবে যাদের সম্পদের পরিমাণ কম এবং যোগাযোগ রয়েছে অল্পবিস্তর, তারাও বাধ্য হবে ইউক্রেন ছাড়তে।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে গ্রান্ডি বলেন, শরণার্থীর এই ঢল মোকাবিলায় ইউরোপীয়দের পরিস্থিতি জটিলাকার ধারণ করবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইউক্রেনীয়দের সঙ্গে সব ইউরোপীয়কে আরও বেশি একাত্মতা প্রকাশ করতে হবে মন্তব্য করেছেন তিনি।
এই পরিস্থিতির সঙ্গে বসনিয়া ও কসোভো যুদ্ধের তুলনা করেছেন গ্রান্ডি। তিনি বলেন, যুদ্ধের সময় এই দুই দেশ ও অঞ্চলের মানুষ গণহারে ওই সব এলাকা ছেড়েছিল। ২০ থেকে ৩০ লাখ মানুষ ওই এলাকা ছেড়েছিল। কিন্তু এসব মানুষ প্রায় ৮ বছরে ওই এলাকা ছেড়েছিল।
মানবিক করিডর খুলে দিতে প্রস্তুত রাশিয়া, বেসামরিকেরা যাবেন পছন্দের জায়গায়
আজ মঙ্গলবার ইউক্রেনে রুশ হামলা ১৩তম দিনে গড়িয়েছে। হামলার মধ্যেই গতকাল সোমবার ইউক্রেন ও রাশিয়ার কর্মকর্তারা তৃতীয় দফা বৈঠক করেন। সামান্য অগ্রগতির মধ্য দিয়ে এ বৈঠক শেষ হয়। আজ চতুর্থ দফা সমঝোতা বৈঠক হওয়ার কথা। এ দফার বৈঠক থেকে বড় কোনো অগ্রগতি আসে কি না, তার জন্যই অপেক্ষা করতে হবে।
এরই মধ্য জাতিসংঘে নিয়োজিত রাশিয়ার দূত ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেছেন, স্থানীয় সময় আজ সকালে ইউক্রেনে অস্ত্র বিরতিতে যাবে তার দেশ। কিয়েভ, চেরনিহভ, সুমি ও মারিওপোল থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে মানবিক করিডর খুলে দেওয়া হবে। যেখানে খুশি সেখানেই যেতে পারবেন তাঁরা। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
গতকাল সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠক শেষে রাশিয়ার দূত ভাসিলি নেবেনজিয়া মস্কোর স্থানীয় সময় আজ সকাল ১০টা থেকে এ অস্ত্রবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। তিনি বলেন, এ প্রস্তাবের আওতায় বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে রাশিয়া কিংবা রাশিয়ার ভূখণ্ডে পাঠানোর বাধ্যবাধকতা থাকছে না।
এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, ইউক্রেনীয় বেসামরিক নাগরিকদের রাশিয়া ও বেলারুশ ‘অধিকৃত ভূখণ্ডে’ সরিয়ে নেওয়া প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।
গতকাল ভাসিলি নেবেনজিয়া বলেন, কিয়েভের পশ্চিম দিকে অবস্থিত ইউক্রেনীয় শহরগুলোর বাসিন্দাদেরও নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এসব মানুষ কোথায় যেতে চান, সেটি তাঁরা তাঁদের পছন্দ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবেন।
এর আগে কয়েকবারই বেসামরিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এর জন্য যুদ্ধরত দুই পক্ষ একে অপরকে দায়ী করেছে।
সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ মার্চ ০৮, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,