ইউক্রেনে আগ্রাসনের ঘটনায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে কোয়াড সদস্যদের মধ্যে একমাত্র ভারতের অবস্থানই ‘কিছুটা নড়বড়ে’ বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। রাশিয়া ও পশ্চিমের সঙ্গে ভারসাম্য রেখে চলার চেষ্টা করছে ভারত। খবর রয়টার্সের।
রাশিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কোয়াডের অন্য তিন সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া। ভারত কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি, এমনকি এ আগ্রাসনের জন্য রাশিয়ার নিন্দাও জানায়নি। ভারতের সামরিক সরঞ্জামের বড় সরবরাহকারী রাশিয়া।
গতকাল সোমবার এক বিজনেস ফোরামে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ইঙ্গিত করে বাইডেন বলেন, ‘তাঁর আগ্রাসনের জবাবে ন্যাটো এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মাধ্যমে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। কোয়াড সদস্যদের মধ্যে ভারতের নড়বড়ে অবস্থান নেওয়ার বিষয়টি বাদ দিলে জাপান কিন্তু খুবই শক্ত অবস্থান নিয়েছে, পুতিনের আগ্রাসন ইস্যুতে যেমনটা অস্ট্রেলিয়াও করেছে।’
ইউক্রেনীয় সরকারকে গণহত্যা সংঘটিত করা থেকে বিরত রাখতে রাশিয়া ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ চালাচ্ছে বলে দাবি করেন পুতিন। তবে এ অভিযোগকে ভিত্তিহীন বানোয়াট বলছে পশ্চিমা দেশগুলো।
গতকাল অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে ভার্চ্যুয়ালি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করে, ‘ইউক্রেন ইস্যুতে অস্ট্রেলিয়া ভারতের অবস্থান বুঝতে পেরেছে, যাতে আমাদের নিজস্ব পরিস্থিতি ও বিবেচনা প্রতিফলিত হয়েছে।’
ইউক্রেনে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে আসছে ভারত। তবে স্নায়ুযুদ্ধের সময়কার মিত্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভোট দানে বিরত ছিল দেশটি। যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্রমশ যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ হচ্ছে ভারত, তবে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার অব্যাহত অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল নয়াদিল্লি। চীনের সঙ্গে হিমালয় অঞ্চলে সীমান্ত বিরোধের পাশাপাশি পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বৈরিতা রয়েছে ভারতের।
এ ছাড়া রাশিয়া থেকে তেল আমদানির কথাও ভাবছে ভারত। সম্প্রতি রাশিয়া থেকে আরও ৫০ লাখ ব্যারেল তেল অর্ডার করেছে দেশটির রাষ্ট্রীয় দুটি কোম্পানি। যুক্তি হিসেবে রাশিয়া থেকে ইউরোপের দেশগুলোর গ্যাস কেনার প্রসঙ্গ টানছেন ভারতীয় বিশ্লেষক ও সরকারি কর্মকর্তারা।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর থেকে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে ভারতকে চাপ দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। তবে দীর্ঘদিনের মিত্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া থেকে বিরত থেকেছে নয়াদিল্লি। অবশ্য পুতিনের সঙ্গে আলাপে যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার টেবিলে ফিরতে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।
সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: মার্চ ২২, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,