এএফপি মস্কো
ইউক্রেনে অভিযান শুরুর আগেই দেশটিতে মস্কোপন্থী বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত দোনেত্স্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল রাশিয়া। সম্প্রতি মস্কো জানায়, ইউক্রেন অভিযানে তাঁদের নতুন লক্ষ্য হবে এই দুই অঞ্চলকে পুরোপুরি মুক্ত করা। এমন পরিস্থিতিতে লুহানস্ক প্রজাতন্ত্রের প্রধান ঘোষণা দিয়েছেন, রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত হতে এ অঞ্চলে গণভোটের আয়োজন করা হবে। আজ রোববারের ওই ঘোষণার পরপরই ইউক্রেনে সামরিক গোয়েন্দা প্রধান অভিযোগ করেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনকে দক্ষিণ ও উত্তর কোরিয়ার মতো দুই ভাগে বিভক্ত করতে চেষ্টা করছে।
রাশিয়ার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে এএফপি জানায়, স্থানীয় সময় রোববার লুহানস্কের প্রধান লিওনিদ পাসেচনিক বলেন, ‘আমি মনে করি, শিগগিরই প্রজাতন্ত্রে একটি গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই গণভোটে রাশিয়ায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বিষয়ে লুহানস্কের মানুষ তাঁদের মতপ্রকাশ করবেন।’
কিয়েভে ২০১৪ সালে মস্কোপন্থী সরকারের পতন হয়। ওই বছরই ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয় রাশিয়া। পরে রাশিয়ার যোগ দিতে ক্রিমিয়ায় গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তখন ক্রিমিয়ার মানুষ রাশিয়া ফেডারেশনে যুক্ত হওয়ার পক্ষ মত দেন। ২০১৪ সালেই দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলকে স্বাধীন ঘোষণা করেন রুশপন্থী বিদ্রোহীরা। এর পর থেকে বিদ্রোহীদের সঙ্গে পশ্চিমাপন্থী ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সংঘাত চলছে। দীর্ঘ আট বছরের এ সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৪ হাজারের বেশি মানুষ।
লুহানস্কের প্রধানের গণভোটের ঘোষণার পর মিশ্র প্রতিক্রিয়া এসেছে রুশ আইনপ্রণেতাদের পক্ষ থেকে। রাশিয়ার পার্লামেন্ট ডুমার সদস্য ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক একটি কমিটির প্রধান লিওনিদ কালাশনিকভের মতে, গণভোটের জন্য এটা সঠিক সময় না। তবে ভিন্ন কথা বলছেন রুশ সিনেটর আন্দ্রেই ক্লিশাস। তাঁর ভাষ্য, সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলগুলোর (দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক) নিজেদের ভবিষ্যৎ বেছে নেওয়ার অধিকার রয়েছে।
এদিকে লুহানস্কে প্রস্তাবিত গণভোটের ঘোষণার নিন্দা জানিয়েছে কিয়েভ। এটা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে ক্ষুণ্ন করতে রাশিয়ার অব্যাহত প্রচেষ্টার অংশ বলে উল্লেখ করেছেন ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওলেগ নিকোলেঙ্কো। এএফপিকে তিনি বলেন, সাময়িকভাবে দখলে থাকা এসব অঞ্চলে গণভোটের কোনো আইনি বৈধতা নেই।
এমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান কিরিলো বুদানভ দাবি করেছেন, ইউক্রেনকে দুই ভাগে বিভক্ত করে একটি মস্কো-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল গড়ে তুলতে চাচ্ছে রাশিয়া। এ ক্ষেত্রে তিনি উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার উদাহরণ দিয়েছেন। রাশিয়ার দখল করা অঞ্চলগুলোয় ইউক্রেন খুব শিগগিরই গেরিলা হামলা শুরু করবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এই গোয়েন্দা প্রধান।
এই গণভোট এমন এক সময় এল, যখন দুই দিন আগেই রাশিয়ার বাহিনী লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক নিয়ে গঠিত দনবাস অঞ্চলকে পুরোপুরি মুক্ত করার ঘোষণা দেয়। রাশিয়ার বাহিনী দাবি করে, বর্তমানে লুহানস্কের ৯৩ শতাংশ আর দোনেৎস্কের ৫৪ শতাংশ রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে।
সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: মার্চ ২৭, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,