অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষার যে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু হয়েছে, তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তোমরা এর থেকে বেরিয়ে যেয়ো না।’ তিনি এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে ছাত্রদের সার্বক্ষণিক কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
———————————–
শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চুপচাপ বসে থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, এতদিন চুপচাপ শুয়ে শুয়ে স্বপ্নের মধ্যে আনন্দ সহকারে লুটপাট করে যাচ্ছিল। তাদের স্বপ্ন শিক্ষার্থীরা ভেঙে দিয়েছে। তারা কী এখন চুপচাপ বসে থাকবে? মোটেও না। খুব চেষ্টা করবে তোমাদের যেন দুঃস্বপ্নের লুকিয়ে দেওয়ার। তারা চেষ্টার ত্রুটি করবে না। যেটা শুরু করছো সেই কাজ সমাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত এখান থেকে বেরিয়ে যেও না।
রোববার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের জন্ম থেকে এই সুযোগ আর আসেনি। যে সুযোগ তোমরা আমাদের হাতে তুলে দিয়েছ এটা যেন হাতছাড়া না হয়। এই সুযোগ হাত ছাড়া হলে বাংলাদেশ আর রাষ্ট্র থাকবে না। এটা শুধু রাষ্ট্র না, পৃথিবীর সম্মানিত রাষ্ট্রে যেন পরিণত হয়।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, শিক্ষার্থীদের দেখছি আর ভাবছি, কী একটা স্বপ্ন আমাদের সামনে, জাতির সামনে তোমরা নিয়ে এসেছ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছে তাদের স্মরণ করে তিনি বলেন, যারা শহীদ হয়েছে আজ তারা আমাদের সঙ্গে বসতে পারতো। কিন্তু সেই সুযোগ তাদের দেওয়া হয়নি। যখন হাসপাতালে আহতদের দেখার জন্য যাই তাকাতে কষ্ট হয়।
তিনি আরও বলেন, একজন তরুণকে যখন দেখতে যাই তখন সে জিজ্ঞেস করে স্যার, ক্রিকেট খেলব কীভাবে? ক্রিকেট তার মাথা থেকে সরছে না। যতবার দেখি, মনে প্রশ্ন জাগে এটাই আমরা বাংলাদেশ বানিয়েছি?
অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান বলেন, কালকে একটা হাসপাতালে গেলাম, আবার সেই দৃশ্য। তরুণ প্রাণ, অনেকের মাথার খুলি উড়ে গেছে। অনেকের শরীরে গুলি রয়ে গেছে। বেঁচে আছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, যতবার শুনি, যতবার দেখি, আবার নতুন করে প্রতিজ্ঞা করতে হয়, যে স্বপ্নের জন্য তারা প্রাণ দিয়েছে সেই স্বপ্নকে আমরা বাস্তবায়ন করব। এটা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, আমি সাক্ষাতের সময় যে দৃশ্য দেখছি সেটা তো সবাই দেখছে না। যারা হাসপাতালে আসছেন তারা হয়তো অনুধাবন করতে পারছে। মানুষকে জানাতে হবে, বোঝাতে হবে। কি নৃশংসতা ছিল।
সূত্র:সমকাল।
তারিখ: সেপ্টম্বর ০৮, ২০২৪
রেটিং করুনঃ ,