নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী বলেছেন, আফগানিস্তানের শিশুদের আমাদের সন্তান হিসেবে ভাবতে হবে। কারণ যেকোন যুদ্ধ বা বিদ্রোহে শিশুরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রোববার তিনি আফগানিস্তানের শাসক গোষ্ঠীকে সেই দেশের শিশুদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার প্রতি নজর দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান।
(কৈলাশ সত্যার্থী জন্ম: ১১ জানুয়ারি, ১৯৫৪) মধ্যপ্রদেশের বিদিশায় জন্মগ্রহণকারী বিশিষ্ট ভারতীয় শিশু অধিকার কর্মী ও নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী। ১৯৯০-এর দশক থেকে ভারতে শিশু শ্রমের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। তার সংগঠন বাচপান বাঁচাও আন্দোলন অক্টোবর, ২০১৪ সাল পর্যন্ত আশি হাজারেরও অধিক শিশুকে ক্রীতদাসত্বের বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে মুক্ত করেছে এবং তাদের পুণঃমিলন, পুণর্বাসন ও শিক্ষায় সহযোগিতা করেছে। মালালা ইউসুফজাইয়ের সাথে যৌথভাবে তাকে ২০১৪ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। এ প্রসঙ্গে নোবেল কমিটি বলেছে যে, ‘শিশু ও তরুণদের নির্যাতনের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ এবং সকল শিশুর শিক্ষার অধিকার ফিরিয়ে আনার প্রেক্ষাপটে তাঁকে এ পদক প্রদান করা হলো।)
কৈলাশ সত্যার্থী সম্প্রতি জাতিসংঘের টেকসিই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অ্যাডভোকেট হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। তিনি আফগান শিশুদের সুরক্ষার জন্য দ্রুত এবং টেকসই প্রচেষ্টা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। খবর দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।
তিনি বলেছেন, যদি মানুষ বা জাতি মনে করে এটা আফগান শিশুদের ব্যাপার এবং আমরা আফগানিস্তানে শান্তি স্থাপন করতে যাচ্ছি। তাহলে সেটা সম্ভব হবে না। আফগানিস্তানের শিশুদের আমাদের সন্তানের মতো ভাবতে হবে। তাদের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমাদের যৌথভাবে প্রচেষ্টা করা উচিত।
তিনি আরও বলেন, আফগানিস্তানে যারা শাসন করছে তাদেরকে বার্তা পৌঁছানো উচিত। কারণ তাদের সঙ্গে যুক্ত না হয়ে আফগান শিশুদের কল্যাণ সম্ভব নয়।
জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) দাবি করছে আফগানিস্তানে দশ মিলিয়ন শিশু পর্যাপ্ত খাদ্য, ওষুধ এবং পানীয় জলের অভাবে রয়েছে। তাদের তাৎক্ষণিক সাহায্যের প্রয়োজন।
ইউনিসেফ জানিয়েছে, আফগানিস্তানে বর্তমান পরিস্থিতি চলমান থাকলে পাঁচ বছরের কম বয়সী এক মিলিয়ন শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগবে।
এদিকে আফগানিস্তানের বেশ কয়েকজন চিকিৎসক বলছেন, গত মাসে অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে।
আফগান শিশুদের বিষয়ে সত্যার্থী আরও বলেন, আমাদের আফগানিস্তানের শাসকদের কাছে আস্থাভাজন হতে হবে। তাদের বলতে হবে আমরা সবাই আপনার বাচ্চাদের যত্ন নিই। তারা শুধু আপনার সন্তান নয় তারা আমাদেরও সন্তান।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের এসডিজি অ্যাডভোকেট হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর সত্যার্থী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছিলেন, বিশ্বে যদি শিশুদের রক্ষা ও শিক্ষিত করা না যায় তাহলে আমরা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারব না।
সূত্রঃ সমকাল।
তারিখঃ সেপ্টম্বর ২০, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,