Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

আফগানিস্তানে ঔপনিবেশিক ফাঁদে যুক্তরাষ্ট্র (২০২১)

Share on Facebook

লেখক: ইয়ান বুরুমা চার্চিল কমপ্লেক্স: দ্য কার্স অব বিং স্পেশাল গ্রন্থের লেখক।

১৯৪৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ব্রিটেনের সমাজতান্ত্রিক প্রধানমন্ত্রী ক্লিমেন্ট অ্যাটলি পার্লামেন্টকে জানান, ১৯৪৮ সালের জুনের পর ভারত স্বাধীন হবে। অ্যাটলির পক্ষে ভারত থেকে ব্রিটিশদের প্রত্যাহারের সময়সীমা বাড়ানো আর সম্ভব ছিল না। কেননা, দেশটির হিন্দু-মুসলমান নেতারা দীর্ঘ সময় ধরে স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করে আসছিলেন। মুসলমান নেতারা হিন্দু আধিপত্যের ভয় পাচ্ছিলেন। একটা গৃহযুদ্ধ সেখানে শুরু হলে সেটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে—এই আশঙ্কা ছিল ব্রিটিশদের। অ্যাটলি সময়ের আগেই ব্রিটিশরাজের অবসান ঘোষণা করেন।

১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট ভারতবর্ষের স্বাধীনতার শুরু। পাকিস্তান ভেঙে আলাদা হয়ে যায়। হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে ভয়ানক সংঘাত শুরু হয়। ৫০ লাখ মানুষ মারা যান। আরও অনেক বেশি মানুষ গৃহহীন হয়। দেশভাগের সেই ক্ষত এখনো শুকায়নি। অ্যাটলিকে দায়ী করা হয়, তিনি তড়িঘড়ি করে ভারত ছেড়েছিলেন। সাবেক উপনিবেশকে একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে রেখে এসেছিলেন।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট এখন একই অবস্থার মধ্যে পড়েছেন। একটা রক্তক্ষয়ী বিশৃঙ্খলার মধ্যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্যদের তিনি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। বাইডেনের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বিশ্লেষকেরা বলছেন, আফগানিস্তানে আমেরিকা আরও কিছুদিন থেকে যেতে পারত।

প্রশ্ন হচ্ছে, অ্যাটলি কিংবা বাইডেন—যে–ই হোক না কেন, ভারত কিংবা আফগানিস্তানকে স্থিতিশীল অবস্থায় রেখে আসা তাঁদের পক্ষে কি সম্ভব ছিল? অ্যাটলি তো জানতেনই, ভারত, এমনকি পাকিস্তানে দায়িত্বশীল ও মধ্যপন্থীরা শাসনক্ষমতায় বসতে যাচ্ছে। জওহরলাল নেহরু কিংবা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ—দুজনেই নিয়মতান্ত্রিক নেতা হিসেবে স্বীকৃত। এরপরও গৃহযুদ্ধ ঠেকাতে তঁারা ব্যর্থ হয়েছিলেন। আফগানিস্তানের ক্ষেত্রে যোগ্য কারও হাতে শাসনভার দিয়ে আসার বিলাসিতা বাইডেনের ছিল না।

অ্যাটলি কিংবা বাইডেনকে তাঁদের সিদ্ধান্তের ফলে সৃষ্ট সংঘাতের জন্য দায়ী করা যেতেই পারে। সম্ভবত তাঁরা ভুলও করেছেন। কিন্তু দুই নেতাই ঔপনিবেশিক ফাঁদে ধরা পড়েছেন। বিদেশি শাসকেরা যখন ক্ষমতা আর অর্থ দিয়ে একটা নির্ভরশীল দেশীয় অভিজাত শ্রেণি তৈরি করে, তখন দাঙ্গা-ফ্যাসাদ ছাড়া সেখান থেকে চলে আসা অসম্ভব একটা ব্যাপার। বিদেশি শাসকেরা যত দীর্ঘ সময় ধরে থাকবে, দাঙ্গা-ফ্যাসাদ তত বেশি তীব্র হবে।

পরিকল্পনা করে সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার ঘটনা বিরল। বেশির ভাগ ইউরোপীয় উপনিবেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বাণিজ্যে বিস্তারের পথ ধরে। দেশীয় শাসকদের সেখানে তৈরি করা হয়েছিল। একে অন্যের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। দীর্ঘদিন ধরে ভারতের একটা বড় অংশ শাসন করেছিল ব্রিটিশ বাণিজ্য কোম্পানি। এরপর ঔপনিবেশিক সরকার বাণিজ্যিক স্বার্থ রক্ষায় কোম্পানির কাছ থেকে শাসনক্ষমতা নিয়ে নেয়। সাম্রাজ্যবাদী শাসনকে অনেক ক্ষেত্রেই ন্যায্যতা দেওয়া হয় খিস্ট্রীয় ধর্মপ্রচারকদের উদ্যম দিয়ে। এ পথ ধরেই ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে ব্যাপকসংখ্যক নাক উঁচু মানসিকতার শিক্ষিত দেশীয় অভিজাত শ্রেণি তৈরি হয়েছিল। তারা পশ্চিমের অনুকরণ করতে শুরু করেন।

ঔপনিবেশিক অভিযানের ক্ষেত্রে আমেরিকা উদ্যমহীন। তা ছাড়া আমেরিকানরা সাম্রাজ্যবাদের বিরোধী। ভিয়েতনামে কমিউনিজমের বিরুদ্ধে এবং ইরাক-আফগানিস্তানে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে আমেরিকা যুদ্ধ করেছে। মুক্তবাজার অর্থনীতি আর গণতন্ত্রের নামে এ যুদ্ধের ন্যায্যতা তারা দিতে চেয়েছে। অন্ধকারাচ্ছন্ন জনগোষ্ঠীকে আলোক বিতরণের এই ঘটনাবলির পরিণতি হয়েছে ভয়াবহ।

যে নামেই ভিন দেশে আগ্রাসন চালানো হোক না কেন, পরিণতি কিন্তু একই। স্থানীয় অভিজাত, যেমন কাবুল কিংবা অন্য শহরের শাসকেরা হয়তো ভালো করেছে। কিন্তু এনজিও কিংবা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকারের নির্ভরশীলতার ফলাফল কী হয়েছে? এটা দুর্নীতিতেই জ্বালানি জুগিয়েছে। বিদেশি সামরিক বাহিনী এবং রাজনৈতিক অভিভাবকদের সামনেই এটা ঘটেছে। যে দেশটি তারা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে, সেই দেশটি নিয়ে তাদের বোঝাপড়া খুবই সামান্য।

ঔপনিবেশিক অভিজাতেরা দুর্নীতির মাধ্যমে ফুলে–ফেঁপে ওঠে। স্বদেশিদের কাছে তাদের কোনো বৈধতা থাকে না। বিদ্রোহী আর বিপ্লবীদের গ্রহণযোগ্যতা তুলনামূলক বেশি থাকে। কিন্তু তারা কেবল বল প্রয়োগের মাধ্যমে শাসন করতে জানে। সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ফাঁদে পড়ে। সরে আসা সব সময়ই খারাপ। কিন্তু থেকে যাওয়া আরও বাজে।

অ্যাটলে ও বাইডেন এটা বুঝতে পেরেছিলেন। সে কারণেই তঁারা সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। শিশুসুলভ আচরণের অভিযোগে বাইডেনকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। এটা গ্রহণযোগ্য নয়। আমার কাছে মনে হয়, আফগানিস্তান থেকে সরে আসার এই সিদ্ধান্তের কারণ হচ্ছে, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, আর দেরি করার উপায় নেই। আরও নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, পরিস্থিতি আরও বিশৃঙ্খল হয়ে উঠবে। উপনিবেশের ফাঁদে আরও বেশি করে জড়িয়ে পড়ার চেয়ে সরে আসাটাই উত্তম।

এটা শুনতে নিষ্ঠুর মনে হতে পারে। কিন্তু তালেবান উত্থানের জন্য বাইডেনকে দায়ী করা যায় না। অনেকগুলো যুদ্ধ আর বিদেশি আগ্রাসনের ফলে আফগানিস্তানের এই ভঙ্গুর অবস্থা। আমেরিকা সেখানে প্রথম যায়নি। কিন্তু বড় শক্তিগুলো কখনোই অতীত থেকে শিক্ষা নেয় না।

ইংরেজি থেকে অনূদিত, স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট

● ইয়ান বুরুমা চার্চিল কমপ্লেক্স: দ্য কার্স অব বিং স্পেশাল গ্রন্থের লেখক

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ সেপ্টম্বর ০৯, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ