বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সভাপতি (বিজেপি) ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থকে গ্রেফতার দেখিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিবি-গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মনিরুল ইসলাম। তবে কোন মামলায় ও কী অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাননি তিনি।
এর আগে বুধবার রাতে রাজধানীর বারিধারা থেকে তাকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ করে পার্থর পরিবার।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উস্কানিমূলক বিভিন্ন পোস্ট দিয়েছেন আন্দালিব রহমান পার্থ। এরইমধ্যে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সম্প্রতি কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন পোস্ট দেন ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ। পার্থ এক সময় বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম নেতা ছিলেন। পরে তিনি জোট থেকে বেরিয়ে যান।
রাজধানীর বনানীর সেতু ভবনে হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি নিয়ে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দীন আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
এর আগে আজ সকালে রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে আন্দালিব রহমান পার্থকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। সাবেক এই সংসদ সদস্যকে মহাখালীতে সেতু ভবনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের উপকমিশনার জয়নুল আবেদিন জানিয়েছেন।
পরে এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আন্দালিব রহমান পার্থকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করে গোয়েন্দা পুলিশ। শুনানি নিয়ে বিচারক তাঁর ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানিতে আন্দালিব রহমান পার্থের আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, ২০১৮ সালের পর থেকে তাঁদের মক্কেলের বিএনপি–জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক নেই। সেতু ভবনে নাশকতার সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতার প্রশ্নই ওঠে না।
শুনানির এক পর্যায়ে আন্দালিব রহমান পার্থ আদালতকে বলেন, রাজনৈতিক জীবনে তিনি অনেকের বিশ্বাসের জায়গায় যেতে পেরেছেন। তিনি বাংলাদেশে ইতিবাচক রাজনীতি করেন। তাঁর সঙ্গে কোনো অন্যায় আচরণ হলে তা অন্য যাঁরা ইতিবাচক রাজনীতি করেন, তাঁদের জন্য খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা, ভাঙচুর, সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সেতু ভবনে দুই দিন হামলা চালিয়ে অর্ধশতাধিক গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অফিস ভবনও। নাশকতার এসব ঘটনায় দেশজুড়ে গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গত মঙ্গলবার রাত থেকে গতকাল বুধবার দুপুর পর্যন্ত সময়ে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে প্রায় ১ হাজার ৪০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৬৪১ জনকে। গত ৮ দিনে (১৭-২৪ জুলাই) সারা দেশে গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে চার হাজার।
সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: জুলাই ২৫, ২০২৪
রেটিং করুনঃ ,