Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

আন্তন চেখভ এবং তার লেখা

Share on Facebook

প্রতি
জি,আই, রোশোলিমো
ইয়াল্টা, অক্টোবর ১১, ১৮৯৯

…আত্মজীবনী? আমার একটা অসুখ আছে- আত্মজীবনীভীতি, অটোবায়োগ্রাফোফোবিয়া। নিজের সম্পর্কে কোথাও কিছু পড়া, কিংবা ছাপানোর জন্য কিছু লেখা সত্যিকার অর্থে আমার কাছে একটা অত্যাচার। অন্য পৃষ্ঠায় আমি তোমাকে কিছু লিখে পাঠিয়েছি, মোটামুটি নীরস, কিন্তু আমার এর চেয়ে বেশী আর কিছু করার নাই…

আমি, এ.পি. চেখভ, জন্ম নিয়েছি ১৮৬০ সালের ১৭ই জানুয়ারি, তাগানরোগে। জার কন্সট্যান্টাইন গির্জার কাছে একটা গ্রীক স্কুলে আমার পড়াশোনা শুরু; তারপর পর্যায়ক্রমে তাগানরোগ হাইস্কুলে উন্নতি। ১৮৭৯ সালে আমি মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুষদে ভর্তি হই। সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদ সম্পর্কে আমার ধারণা আসলে বেশি ছিল না। তাই কিসের ভিত্তিতে আমি তখন এই চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়টা বেছে নিয়েছিলাম আমার মনে নেই তবে এটা ঠিক যে এ নিয়ে পরে আমার ভেতর কোন আক্ষেপ কাজ করেনি। পড়াশোনার প্রথম বর্ষেই আমি সাপ্তাহিক খবরের কাগজ আর সাময়িকীতে গল্প ছাপাতে শুরু করি, আর আশির দশকের শুরুতে করা এইসব সাহিত্যকর্মই পরে আমার জীবনে একটা স্থায়ী পেশাদারিত্বের রূপ নিয়েছে। ১৮৮৮ সালে আমি পুশকিন সম্মাননা পাই। ১৮৯০ সালে আমি সাহালিন দ্বীপে যাই আর তারপরে আমাদের এই ঔপনিবেশিক জেলখানা নিয়ে একটা বই লিখি। দিনের পর দিন খবরের কাগজের জন্য যেসব লেখা আমি লিখেছি সেগুলো এখন খুঁজে বের করা আর সংগ্রহে রাখা মুশকিলের কাজ। গত বিশ বছরের লেখক জীবনে আমি তিনশো’রো বেশী লেখা ছাপিয়েছি যেগুলোর মধ্যে গল্প উপন্যাস অন্যতম। পাশাপাশি মঞ্চের জন্য নাটকও লিখেছি।

আমার একেবারেই কোন সন্দেহ নাই যে ডাক্তারীবিদ্যা নিয়ে পড়াশোনা করার ব্যাপারটা আমার সাহিত্যেকর্মে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রেখেছে; এটা আমার পর্যবেক্ষণ শক্তির পরিধি অনেকাংশে বাড়িয়েছে, আমাকে লেখক হিসেবে এমন এমন ব্যাপারে জ্ঞান অর্জন করতে সাহায্য করেছে যেটা কেবল এরকম একজন ডাক্তারই বুঝতে পারবে। এটা আমাকে অনেক ক্ষেত্রে পথ দেখিয়েছে, আর সম্ভবত ডাক্তারীবিদ্যার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্যই লেখালেখিতে আমি অনেক ভুল করার হাত থেকে বেঁচে গেছি।

প্রকৃতিবিজ্ঞান আর বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে মেশামেশি সবসময় আমাকে সাবধানী হতে শিখিয়েছে, আর আমি সবসময় চেষ্টা করেছি বস্তুনিষ্ঠ বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্যের সাথে সমঝোতা করে চলতে; আর যেখানে আমি তা পারিনি, আমি কোন কিছু লেখার চেষ্টা করিনি। তবে এটাও ঠিক যে সৃষ্টিশীল কাজকর্ম সবসময় যে বিজ্ঞানের তত্ত্বের সাথে একাত্ম বোধ করে চলবে না তো নয়। মঞ্চের উপর বিষ খেয়ে মারা যাওয়ার ঘটনা তো একেবারে হুবহু বাস্তবের সাথে মেলানো অসম্ভব। কিন্তু সেখানেও বিজ্ঞানের ভাবের সাথে ঘটনাগুলোর ঐকতানের অনুভূতি থাকতে হবে; মানে যারা দেখছে, দর্শক কিংবা পাঠক, তাদের কাছে এটা অবশ্যই পরিষ্কার হতে হবে যে তারা যা দেখছে এটা শিল্পের একটা শর্ত, আর তারা এমন এক লেখকের সাথে উঠাবসা করছে যে আসলে ব্যাপারগুলো জানে।

আমি সেইসব সাহিত্যকদের দলে নাই যারা বিজ্ঞানের দিকে সন্দেহ আর দ্বিধাচিত্তে তাকায়।আবার আমি তাদের দলেও নাই যারা সব কিছুর দিকেই দৌড় মারে শুধু নিজের কল্পনাশক্তিকে সম্বল করে। আমি এদের মাঝে থাকতে চাই না…

ডিসেম্বর ২৩, ১৮৮৮

… কখনো কখনো এমন সময় আসে যখন আমি সব বিশ্বাস হারিয়ে ফেলি। কাদের জন্য আর কীসের জন্য আমি লিখি? পাব্লিকের জন্য? আমজনতার জন্য? আমার তা মনে হয় না, আর আমজনতায় বিশ্বাস করার চেয়ে ভূত বেশি বিশ্বাস করি আমি; অশিক্ষিত, বাজে ভাবে বেড়ে উঠা, এদের সবচেয়ে সুন্দর উপাদানগুলোও অসরল কৃত্রিম কপট আমাদের কাছে। আমি কখনই বুঝতে পারি না এইসব আমজনতা আমাকে আদৌ চায় কিনা। বুয়েরনিন বলে যে এরা চায় না, আর আমি নাকি তুচ্ছ বিষয়ে সময় নষ্ট করতেছি; আর একাডেমি আমাকে একটা পুরস্কারও দিয়েছে। শয়তানও আসলে এর কোনো আগামাথা বের করতে পারবে না। টাকাপয়সার জন্য লিখি? কিন্তু আমার টাকাপয়সা কখনই হবে না, আর এগুলা না পেতে পেতে আমার গা সওয়া হয়ে গেছে। টাকার জন্য লিখলে আমি নির্জীব অনুভূতিহীনের মতন লিখি। প্রশংসা পাওয়ার জন্য লিখি? কিন্তু প্রশংসাতো আমাকে বিরক্ত করে। সাহিত্যসমাজ, ছাত্রছাত্রী, প্লেশ্‌চেভ, প্রমিলা রমণী ইত্যাদি ইত্যাদিরা আমার ‘নার্ভাস ব্রেকডাউন’ নিয়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলো, কিন্তু একমাত্র গ্রিগোরোভিচ্‌ই প্রথম তুষারপাতের বর্ণনাটুকু ধরতে পেরেছিলো। এরকম আরও অনেক। যদি আমাদের সমালোচক থাকতো তবে আমার জানা উচিত যে আমি মালমশলা সাপ্লাই দিতে পারতাম, সেগুলো ভালো হলো না খারাপ হলো সেটা ব্যাপার না – শুধু যারা নিজেদের বিলিয়ে দেয় জীবন বুঝতে, আমি তাদের কাছে ঠিক তেমন একজন জ্যোতির্বিজ্ঞানীর কাছে আকাশের তারা যেমন। আর তারপরও আমার সব কাজ বাদ দিয়ে এইসব ঝামেলা করতে হয় আর জানতে হয় আমি কীসের জন্য কাজ করতেছি। এটা শুধু তুমি, আমি, মুরাভলিন; আর বাদবাকি সব পাগলা যারা নিজেদের সুখী সন্তুষ্ট করতে বই ছাপায় আর নাটক লেখে। নিজেকে সুখী করা অবশ্যই একটা চমৎকার ব্যাপার; লেখার সময় আনন্দ টের পায় যে লেখে, কিন্তু তারপর? থাক আমি এখন চুপ করি।…

…অনেক জাতি, ধর্ম, ভাষা, সভ্যতা কোনো চিহ্ন ছাড়া হারায়ে গেছে – হারায়ে গেছে কারণ তাদের কোন ইতিহাসবিদ কিংবা জীববিজ্ঞানী ছিল না বলে। একইভাবে অনেক জীবন আর শিল্প হারায়ে যাবে আমাদের চোখের সামনেই শুধুমাত্র কোনো সমালোচনা ছিল না বলে। কেউ কেউ আপত্তি জানাতে পারে এটা বলে যে সমালোচকদের আসলে কোনো কাজ নাই কারণ সব আধুনিক সাহিত্য আসলে দুর্বল আর অগুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এটা আসলে একটা নিচু দৃষ্টিভঙ্গি। জীবনকে শুধু পজিটিভলি নয়, নেগেটিভলিও দেখতে হবে। যেসব অভিযোগগুলো প্রায় সময় উঠে যে ‘আশির দশক’ কোনো ভালো সাহিত্যিক তৈরী করতে পারে নি, সেসব অভিযোগগুলোর মধ্যেই পাঁচটা ভ্যলিউমের মালমশলা আছে।…

… সব মিলে আমার জীবন একটা বিষণ্ণ জীবন; আর মানুষদের ঘৃণা করার ফজিলত আমি পেতে শুরু করেছি যেটা আগে আমার সাথে কখনও হয় নাই। সব ফালতু দীর্ঘ আলাপচারিতা, দর্শনার্থী, সাহায্য চাওয়া মানুষ, মাত্র এক দুই তিন রুবলের জন্য সাহায্যপ্রার্থী মানুষ, গাঁটের পয়সা খরচ করে ক্যাবের ভাড়া দিয়ে রুগী দেখতে যাওয়া যারা একটা পয়সা আমাকে দেয় না – সব মিলে এমন একটা জগাখিচুড়ী অবস্থা যে আমার ঘর ছেড়ে পালাতে ইচ্ছা করে। মানুষজন আমার কাছ থেকে টাকাপয়সা নেয় কিন্তু আর ফিরায় দেয়ার নাম নাই, তারা আমার বই নেয়, তারা আমার সময় নষ্ট করে… বিবর্ণ রোগাক্রান্ত ভালোবাসার মতন একটা কিছু শুধু বাকি আছে…

সূত্র: সংগৃহিত।
তারিখ: অক্টোবর ০৫, ২০২০

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ