শিশু-কিশোরদের নিয়ে লেখা – ১
আমাদের দেশের স্কুল বা বিদ্যালয় গুলিতে যে শিক্ষা ব্যবস্থা, তা চলে পাঠ্য সূচি অনুশারে বা নির্দিষ্ট একাডেমিক সিলেবাস অনুযায়ী। শিক্ষা অর্জনের জন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষা হচ্ছে একটি পথ, এই পথ ধরেই শিক্ষার্থীরা শিক্ষা অর্জন বা জ্ঞান অর্জন করে। সার্টিফিকেট অর্জন করে এর পরে পেশাগত জীবনে প্রবেশ করে যেমন চাকুরী, ব্যবসা বা গবেষনা।
ছোট পুকুরে বড় মাছের চাষ চলে না, বড় মাছের জন্য চাই বড় পুকুর তেমনি শিশু-কিশোরদের জন্য উন্নত ভবিষৎ গড়ার জন্য প্রয়োজন চিন্তা, চেতনার জন্য বড় ভুবন। বড় ভুবনের মধ্যে বিচরণের মধ্য দিয়ে আমাদের শিশু-কিশোরদের তৈরী হবে উন্নত ও সার্থক জীবন।
যে পথের সাথে, রাস্তার সাথে সবচেয়ে আমরা বেশি পরিচিত ( আকাশ ও পানি পথ ছাড়া) তা তো কোন ঝুলন্ত বা উড়ন্ত কোন পথ নয়, ঝুলস্ত বা উড়ন্ত কোন রাস্তাও নয়। রাস্তার দু ধারে থাকে বিশাল মাঠ, ফসলের মাঠ, নদী, পাহাড়, জংগল আর এগুলই হচ্ছে সাধারণ জ্ঞান যাকে এক কথায় বলা যায় একাডেমিক সিলেবাসের বাইরের বই, নৃত্য কলা, শিল্প-কলা, গান গাওয়া, ছবি আঁকা, খেলা ধুলা, ভ্রমন এমনি শত শত ক্ষেত্র, এই সব বড় বড় ক্ষেত্র বা ভুবনে বিচরণের মধ্য দিয়ে আমাদের শিশু-কিশোরদের জন্য তৈরী হবে উন্নত ও সার্থক জীবনে পৌঁছার এক কাংক্ষিত ও শ্রেষ্ঠ পথ। আর এই পথটুকু তৈরী করে দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের, যারা আমরা কিছুটা প্রবীণ ও অভিজ্ঞ।
আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা অর্জনের সময়ে আমাদের পাঠ্যপুস্তকের একঘেয়েমি থেকে বেরিয়ে আসতে পারে নি। প্রফুল্ল মনে, কিম্বা মনে আনান্দ ধারা নিয়ে, বৈচিত্র্য নিয়ে শিক্ষা লাভ করেতে পারে নি। পারে নি লেখা-পড়াকে খেলার মত করে আপন করে নিতে বই পত্র, খাতা কলমকে খেলনা সামগ্রীর মত মনে করতে।
পাঠ্যপুস্তকের একঘেঁয়েমি থেকে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অর্জন বা জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি সাধারণ জ্ঞানে ও নানান দিক্ষায় সমৃদ্ধ হলে তবেই শিক্ষার্থীরা খুঁজে পাবে শিক্ষার আনন্দ ও বৈচিত্র্য।
বিদ্যালয়ের শিক্ষা অর্জনের সময়ে সাধারণ জ্ঞানে শিক্ষার্থীদের অসাধারণ হতে হবে আর এ জন্য চাই শিক্ষার্থীদের বই মুখি হওয়া, নানান রকমের বই।
ইন্টারনেট, টিভি যতই উন্নত মাধ্যম হোক না কেন অধিক বই পড়ার উপরে আর কোন বিকল্প নেই। শ্রেনী কক্ষের পড়ার বই ছাড়া সিলেবাসের বাইরে বই পড়ে সাধারণ জ্ঞানে অসাধাণ হওয়া যায় এ ধারনাটি আমাদের অভিভাবকদের সবার আগে বুঝে নেওয়া উচিত। এ বিষয়ে আমাদের অভিভাবকদের বড় কাজ হলো ঠিক কোন কোন বিষয়ের উপর তাদের সন্তানরা কোন কোন ব্ই পড়বে তা নির্ধারণ করে দেওয়া, লেখা-পড়ার ক্ষেত্র বাছাই করে দেওয়া। আর ধারণা করা যায় এখানেই অভিভাবকরা সন্তানদের প্রতি সীমাবদ্ধতায় থাকে, সঠিক লক্ষ্য বা সিদ্ধান্ত গ্রহনে ব্যর্থ হয়।
পত্রিকায়, ব্লগে অনেক লেখক নিয়মিত ভাবে শিশু-কিশোরদের জন্য লিখে যাচ্ছেন শিশু-কিশোরদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আমরা তাঁদের সাফল্য প্রত্যাশা করি।
তারিখ: জুন ১৯, ২০১৪
রেটিং করুনঃ ,