লেখক:কে এ এস মুরশিদ।
পোশাক খাত থেকে ভারী শিল্পে বিনিয়োগ কম হচ্ছে। প্রবাসী আয়ে জনসংখ্যাগত সুবিধাও বেশি দিন থাকবে না। নতুন করে ভাবার সময় এখনই।
দেশে দারিদ্র্য বিমোচনে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে বাড়তি খাদ্য উৎপাদন ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ। স্বাধীনতার পর দেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় গ্রামীণ অর্থনীতিকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়। অর্থনৈতিক উন্নতির কেন্দ্রে রাখা হয় গ্রামীণ অর্থনীতিকে। বিগত ৫০ বছরে দেশের রাজনীতিতে অনেক পালাবদল হয়েছে, কিন্তু গ্রামীণ অর্থনীতিকে সব সরকারই কমবেশি গুরুত্ব দিয়েছে। ফলে ধারাবাহিকভাবে দারিদ্র্য কমেছে।
স্বাধীনতার পর দেশে দানাদার খাদ্যের উৎপাদন দ্রুত বেড়েছে। গত শতাব্দীর ষাটের দশকে বিশ্বজুড়ে যখন সবুজ বিপ্লবের সূত্রপাত হয়, তখন বাংলাদেশও ফসলের উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা হয়। কাজটি করা হয়েছিল বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড) কুমিল্লার মাধ্যমে। তখন উচ্চফলনশীল জাতের ধানবীজ, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার শুরু হয়। সেচের মাধ্যমে জমি চাষের আওতায় আনা হয়।
তবে এই চেষ্টা তখন খুব একটা কার্যকর হয়নি। কুমিল্লা ছাড়া দেশের অন্য জেলাগুলোতে দারিদ্র্য বিমোচনে তা তেমন একটা ভূমিকা রাখতে পারেনি। কারণ, বড় বড় সেচ প্রকল্প নেওয়া হলেও তা সারা দেশে সমানভাবে বিস্তৃত করা যায়নি।
আশির দশকে দেশে দারিদ্র্য বিমোচনসহায়ক অনেকগুলো ঘটনা একসঙ্গে ঘটে। প্রথমত, বাণিজ্য উদারীকরণের ফলে দেশে বেসরকারি খাতের মাধ্যমে ছোট আকারের সেচ পাম্প আমদানি শুরু হয়। একসময় সার, কীটনাশক ও বীজ সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ছাড়া আর কেউ আনতে পারত না। এ ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। ফলে কৃষকের কাছে এসব উপকরণ সহজলভ্য হয়। এ কারণে ওই সময়েই মূলত সারা দেশে প্রকৃত সবুজ বিপ্লবের সূত্রপাত হয়। ফলে কৃষকেরা ফসল উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের সুযোগ পান।
বেসরকারি খাতের বড় ভূমিকা
আমদানিতে বেসরকারি খাতকে যুক্ত করা নিয়ে নব্বইয়ের দশকে দেশে অনেক বিতর্ক হয়। বলা হয়, বিশ্বব্যাংকের চাপে সরকার এগুলো করছে। এতে দেশের দরিদ্রশ্রেণির মানুষের খুব বেশি উন্নতি হবে না, সুফল পাবেন মূলত ধনীরা। কিন্তু পরে হিসাব করে দেখা গেছে, দেশে ফসল উৎপাদন বাড়ানোর মধ্য দিয়ে কৃষকদের দারিদ্র্য বিমোচন সবচেয়ে বেশি হয়েছে। দেশের পুষ্টি পরিস্থিতিরও উন্নতি হয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স।
বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যে শ্রমিক যাওয়া শুরু হয় স্বাধীনতার পর থেকে। এর সুফল আসতে শুরু করে আশির দশকে। প্রবাসী আয় দিয়ে কৃষক পরিবারগুলো সেচযন্ত্র, সার, বীজসহ অন্যান্য উপকরণ কেনার সামর্থ্য অর্জন করে, যা একই সঙ্গে দেশের প্রধান ফসলগুলোর উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমে আমদানিনির্ভরতা কমায়। আবার গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতি হয়, দারিদ্র্য কমতে থাকে।
আশির দশক থেকেই বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের ব্যবসা আসতে থাকে। কারখানা হতে থাকে। এসব কারখানায় গ্রামীণ নারীরা শ্রমিক হিসেবে যোগ দিতে শুরু করেন। প্রবাসী শ্রমিক হিসেবে পুরুষের পাঠানো অর্থ আর পোশাক কারখানায় কাজ করে নারীর অর্জিত আয়—এই দুই খাতের অর্থ গ্রামীণ অর্থনীতিতে যুক্ত হতে থাকে। এই অর্থ যেমন ফসল উৎপাদন বাড়ানোর পেছনে ব্যয় হয়, তেমনি অকৃষি খাতেও বিনিয়োগ হতে থাকে।
নব্বইয়ের দশক থেকে গ্রামপর্যায়ে পুকুর ও বিলে আধুনিক মৎস্য খামার হতে শুরু করে। পোলট্রি ফার্ম ও গবাদিপশুর খামার গড়ে উঠতে শুরু করে। গ্রামীণ অর্থনীতির এই বহুমুখী প্রবণতাকে অর্থায়নের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্রঋণ বড় ভূমিকা রেখেছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান স্বল্প আয়ের দেশ থেকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরের ভিত্তি তৈরি হয়েছে।
কোন পথে যাবে বাংলাদেশ
দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়লে দারিদ্র্য বিমোচন হবে—এই ধারণার ওপর ভিত্তি করে এত দিন ধরে দারিদ্র্য বিমোচনের চেষ্টা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় যে সাফল্য আসেনি, তা বলা যাবে না। প্রবৃদ্ধির প্রাথমিক সুফল দেশের উদ্যোক্তা শ্রেণির কাছে যায়, এটা যেমন সত্য, তেমনি দীর্ঘ মেয়াদে দেশের দারিদ্র্য বিমোচনেও তা ভূমিকা রেখেছে। দারিদ্র্য বিমোচনের এই মডেল শুধু বাংলাদেশে নয়, পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশে দেখা যায়। থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামে কৃষির উন্নতির পর শিল্পের উন্নতি দেখা গেছে। এভাবে তারা নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ কিছুটা দেরিতে হলেও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কাজে লাগিয়ে দারিদ্র্য বিমোচন করে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে।
অবশ্য পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর উন্নয়নের মডেলের একটি ভিন্ন দিকও আছে। যেমন ওই দেশগুলো ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় থেকেও ধনী রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারেনি। দারিদ্র্য বিমোচনও একটি পর্যায়ে উন্নীত হয়ে থেমে আছে। অনেক বছর ধরে দেশগুলো আর সামনে আগাতে পারেনি। কিন্তু জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ অনেক দেশ কৃষিতে উন্নতির পর দ্রুত ভারী ও মাঝারি শিল্পে উন্নতি করেছে। তাদের শিল্পের উন্নয়ন দারিদ্র্য বিমোচন ও মাথাপিছু আয় বাড়াতে সহায়ক হয়েছে। কৃষি থেকে শিল্পে এই রূপান্তরের সময়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ কোন পথে দারিদ্র্য বিমোচন করবে, সে বিষয়ে দ্রুত কার্যকর সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে।
শুরুতে কৃষি খাতে উন্নয়নের যে পথটি বাংলাদেশ বেছে নিয়েছে, তা অনেকটা ভারতের মতো। ভারত কৃষি থেকে রূপান্তরের পথে শিল্পের পাশাপাশি সেবা খাতকেও গুরুত্ব দিয়েছে। মানবসম্পদের উন্নতির মধ্য দিয়ে ভারতের মধ্যবিত্ত শ্রেণি আর্থিকভাবে অনেক এগিয়েছে। বিশ্বজুড়ে সেবা খাতে তারা মানবসম্পদকে বিনিয়োগ করে আয় বাড়িয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি কৃষির পর তৈরি পোশাক খাত ও প্রবাসী আয় ছাড়া অর্থনৈতিক উন্নতি ও দারিদ্র্য বিমোচনের বড় কোনো উৎস তৈরি হয়নি। আমাদের রাষ্ট্রীয় নীতি, উন্নয়নের কৌশল ও দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে এই দুই খাত ছাড়া অন্য খাতগুলো গুরুত্ব কম পাচ্ছে, যা দরিদ্র মানুষের সংখ্যা কমিয়ে আনা এবং উন্নতির পরবর্তী ধাপে পৌঁছানোর জন্য অনেক বড় অন্তরায়।
দারিদ্র্য বিমোচনে দরকার নিরাপদ খাদ্য
আমাদের খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে, কিন্তু সেই খাদ্য নিরাপদ করার পেছনে উদ্যোগ কম। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের নিরাপদ খাদ্যের ক্ষেত্রে একটি স্পষ্ট বিভাজন তৈরি হয়েছে। একদিকে ধনীদের জন্য অপেক্ষাকৃত নিরাপদ খাদ্য বিক্রিতে সুপারশপ ও প্যাকেটজাত নিত্যপণ্যের বাজার তৈরি হচ্ছে, সেখানে পণ্যে দাম ও তদারকি—দুটিই বেশি। অন্যদিকে গরিব মানুষদের জন্য থাকছে সাধারণ গ্রামীণ বাজার।
কৃষি উৎপাদনে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও সার ব্যবহার করা হয়। এ কারণে উৎপাদিত ফসলের মধ্যে কীটনাশকের অবশেষ থেকে যায়, যা গ্রামীণ দরিদ্রদের নানা জটিল রোগের কারণ। সরকার একসময় খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে অনেক উদ্যোগী ছিল। কিন্তু চেষ্টাটা মনে হচ্ছে কমে আসছে।
বাংলাদেশের মতো দরিদ্র দেশে এক করোনার (কোভিড-১৯) কারণেই কয়েক কোটি মানুষের আয় কমে গেছে। এর বাইরে দরিদ্র পরিবারগুলোর কোনো সদস্যের বড় কোনো রোগবালাই হলে তাদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হয়। পরিবারগুলো দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যায়। আর নিম্নমানের ও অনিরাপদ খাবারও তাদের অপুষ্টির মুখে ফেলছে, দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ফলে সব মানুষের জন্য নিরাপদ খাবার নিশ্চিত করা দারিদ্র্য বিমোচনের অন্যতম পূর্বশর্ত হতে হবে।
সরকার এ জন্য একটি নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠন করেছে। কিন্তু তাদের জনবল ও ক্ষমতা খুব বেশি দেওয়া হয়নি। আর সরকারি অন্য সংস্থাগুলোকে বাজার তদারকিতে খুব বেশি আগ্রহী হতে দেখা যায় না। তাই সামগ্রিকভাবে খাদ্য নিরাপদ করার জন্য আমাদের উদ্যোগ বাড়াতে হবে।
তৈরি পোশাক ও প্রবাসী আয়ের বাইরে তাকাতে হবে
আমাদের মনে রাখতে হবে, দেশের তৈরি পোশাক খাত থেকে অন্য খাতে, অর্থাৎ ভারী ও মাঝারি শিল্পে বিনিয়োগ কম হচ্ছে। নব্বইয়ের দশকে আমরা চামড়াশিল্প খাতকে বড় করার একটি সুযোগ পেয়েছিলাম। ওই সময়টায় তাইওয়ান তাদের চামড়াশিল্প খাতকে অন্য দেশগুলোতে ছড়িয়ে দিতে চাইছিল। অনেক দেশে তারা এই খাতে বিনিয়োগ করেছে, আমরা সেটা নিতে পারিনি। এখন আবারও সেই সুযোগ আমাদের সামনে এসেছে। চীন, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশগুলো এখন চামড়া ও পাদুকাশিল্প কারখানাগুলো তাদের দেশ থেকে অন্য দেশে সরানোর উদ্যোগ নিয়েছে। দেশে চামড়ার একটি স্থিতিশীল সরবরাহব্যবস্থা থাকায় আমাদের বাড়তি সুবিধা ছিল। এটাকে কাজে লাগিয়ে আমরা চামড়াশিল্পের এই নতুন সুযোগ নিতে পারি। কিন্তু এখনো সাভারের নতুন চামড়াশিল্প নগরের কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারের সমস্যা রয়ে গেছে। ভালোমতো উদ্যোগ নিলে এগুলো দ্রুত সমাধান করা সম্ভব। কারণ, চামড়াশিল্পের উন্নতি হলে সঙ্গে গ্রামীণ পর্যায় থেকে অনেকগুলো স্তরে মানুষের আয় বাড়ার সুযোগ আছে। ফলে তা দারিদ্র্য বিমোচনে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
নব্বইয়ের দশক থেকে গ্রামপর্যায়ে পুকুর ও বিলে আধুনিক মৎস্য খামার হতে শুরু করে। পোলট্রি ফার্ম ও গবাদিপশুর খামার গড়ে উঠতে শুরু করে। গ্রামীণ অর্থনীতির এই বহুমুখী প্রবণতাকে অর্থায়নের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্রঋণ বড় ভূমিকা রেখেছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান স্বল্প আয়ের দেশ থেকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরের ভিত্তি তৈরি হয়েছে।
বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর কাজটি এখনো অনানুষ্ঠানিক পর্যায়ে রয়ে গেছে। তিন দশক ধরে আমরা বিদেশে শ্রমিক পাঠাচ্ছি, কিন্তু তাঁদের বড় অংশ এখনো অদক্ষ। তাঁদের আয় কম। দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শ্রমিক, ব্যবস্থাপক ও প্রযুক্তিবিদ পাঠানোর ক্ষেত্রে আমরা এখনো অনেক পিছিয়ে আছি। এই খাতকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে উদ্যোগও খুব একটা চোখে পড়ছে না। আমাদের মনে রাখতে হবে, প্রবাসী শ্রমিকদের বড় অংশ তরুণ। তাঁরা তাঁদের জীবনের কর্মক্ষম সময়টা প্রবাসে কাটিয়ে আয় করে মধ্যবয়সে দেশে ফিরে আসেন। আর বাংলাদেশ ২০৩০ সাল পর্যন্ত জনসংখ্যাগত সুবিধা পাবে, জনসংখ্যার মধ্যে তরুণেরা বেশি থাকবেন। এরপর কিন্তু দেশে বয়স্ক মানুষদের সংখ্যা বাড়বে। ফলে তখন আমরা চাইলেও এই জনসংখ্যার সুবিধা কাজে লাগিয়ে প্রবাসী আয় বাড়াতে পারব না।
আমরা রাষ্ট্রীয়ভাবে ২০৪০ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন দেখছি। কিন্তু এই উন্নতি করতে হলে আমাদের জ্বালানি তেল প্রক্রিয়াজাত শিল্প, রাসায়নিক শিল্প ও সংযোজন শিল্পে বিনিয়োগ করতে হবে। দেশের অনেক উদ্যোক্তা এই খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসছেন। দেশের উদ্যোক্তাদের নানা ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। তবে একটি দিক থেকে তাঁরা বেশ এগিয়ে, তা হচ্ছে তাঁরা পারিবারিক ব্যবসায়িক ঐতিহ্য না থাকার পরও রাষ্ট্রীয় বড় ধরনের প্রণোদনা ছাড়াই অনেক বড় বড় শিল্প স্থাপন করেছেন। তৈরি পোশাক, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা, সিমেন্ট, রড, কাগজ—অনেক খাতে বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এসব শিল্পকারখানা রাষ্ট্রীয় আয়, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও দারিদ্র্য বিমোচনে বড় ভূমিকা রাখছে।
দ্বিতীয় প্রজন্মের উদ্যোক্তার সংকট
আমাদের উদ্যোক্তাদের একটি বড় দুর্বলতা হচ্ছে, তাঁরা বেশির ভাগই প্রথম প্রজন্মের। নিজস্ব চেষ্টায় তাঁরা অনেক দূর এগিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের দ্বিতীয় প্রজন্মের অনেকের মধ্যে উদ্যোগকে আরও এগিয়ে নেওয়া এবং বহুমুখী করার চেষ্টা কম দেখা যাচ্ছে। অনৈতিক চেষ্টার বাইরেও দেশের মুদ্রানীতি, সুদের হার এবং বিনিয়োগের সুযোগের অভাবের কারণেও অনেকে অর্থ বিদেশে সরিয়ে ফেলছেন।
এটা দেশের অর্থনীতির জন্য বেশ বিপজ্জনক দিক। এই প্রবণতা থেকে উদ্যোক্তাদের ফেরাতে হবে। এ জন্য দেশে তাঁদের বিনিয়োগের নিরাপত্তা ও সম্ভাবনা বাড়াতে হবে। দেশ থেকে অর্থ পাচার হতে থাকলে সামগ্রিকভাবে অর্থনীতি ও দারিদ্র্য বিমোচনের অর্জন ভেঙে পড়তে পারে।
আজ ১৭ অক্টোবর, রোববার জাতিসংঘ ঘোষিত দারিদ্র্য বিমোচন দিবস। দারিদ্র্য কমানোর পরবর্তী পর্যায়ে যেতে নতুন করে ভাবার সময় এখনই।
*** লেখক: সাবেক মহাপরিচালক, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)
সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ অক্টোবর ১০, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,