লেখক:জাহেদ উর রহমান।
চলমান অর্থনৈতিক সংকটের ব্যাপ্তি হবে কতটুকু, সংকট কতটা গভীর হবে, স্থায়িত্ব হবে কেমন, আমাদের জীবনকে সেটা কতটা প্রভাবিত করবে, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হচ্ছে কি না, দেশে সত্যিই দুর্ভিক্ষ হবে কি না, দুর্ভিক্ষ হলে সেটা লঙ্গরখানা খোলার মতো পরিস্থিতি তৈরি করবে কি না—নানা প্রশ্ন ঘুরে বেড়াচ্ছে আমাদের চারপাশে। এমনটা হওয়া খুব স্বাভাবিক যখন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নিয়মিত দুর্ভিক্ষের ব্যাপারে মানুষকে সতর্ক করে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রী এবং সরকারের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বিদ্যমান আর্থিক সংকটকে বৈশ্বিক কতগুলো বিষয়ের অনিবার্য পরিণতি হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছেন।
একটা হিসাব দিয়ে ব্যাপারটা সহজে বুঝে নেওয়া যায়। গত কয়েক মাসে ডলার শক্তিশালী হয়ে ওঠার পরিপ্রেক্ষিতে সব মুদ্রা ডলারের বিপরীতে তাদের মূল্য হারিয়েছে। ঘটনাটা ভারতের রুপির ক্ষেত্রেও ঘটেছে। ফলে রুপির দাম ধরে রাখার জন্য রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়াকেও বাজারে রুপি ছাড়তে হয়েছে আগের তুলনায় বেশি। এতে এ বছরের শুরুতে থাকা ভারতের ডলারের রিজার্ভ কমেছে বেশ খানিকটা। বছরের শুরুতে ভারতের ডলার রিজার্ভ ছিল ৬৩৩ বিলিয়ন ডলার। এটা নভেম্বরের ২৫ তারিখে এসে দাঁড়িয়েছে ৫৪৭ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। ভারতের প্রতি মাসে আমদানির পরিমাণ কম-বেশি ৬০ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, ভারতের বর্তমান রিজার্ভের তারা ৯ মাসেরও বেশি আমদানির ব্যয় মেটাতে পারবে।
ওদিকে বাংলাদেশের রিজার্ভ প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলার, যার ওপরে অনেকগুলো পুরোনো দায় আছে। আমদানিকারকদের বৈদেশিক মুদ্রায় নেওয়া অত্যন্ত স্বল্পমেয়াদি ঋণ (বায়ার্স ক্রেডিট), করোনার সময় পিছিয়ে দেওয়া (ডেফার্ড) এলসির, ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকে বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধযোগ্য বকেয়া ইত্যাদি হিসাবে ধরলে মোট দায় ১৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
সেই তুলনায় বর্তমান রিজার্ভের অঙ্ককে একেবারেই তুচ্ছ বলে মনে হবে নিশ্চয়ই। কিন্তু আমরা এসব আশু দায় ও চাপের কথা সরিয়ে রাখলেও দেখতে পাই, বাংলাদেশের রিজার্ভ মোটামুটি চার মাসের মতো আমদানি ব্যয় নির্বাহ করার মতো। দুই দেশের রিজার্ভের তুলনার ক্ষেত্রে আমরা স্মরণ রাখব, যেখানে চাল-গমের মতো অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যশস্যের বিরাট একটা অংশ আমাদের আমদানি করতে হয়, সেখানে ভারত এই দুই পণ্যের ক্ষেত্রেই স্বয়ংসম্পূর্ণ তো বটেই, রপ্তানিকারকও।
আমরা সরকারকে প্রশ্ন করতে চাই, করোনার অভিঘাত এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বিশ্বমন্দার প্রভাব ভারতের ওপরও পড়েছে নিশ্চয়ই, কিন্তু সে দেশের রিজার্ভ আমাদের তুলনায় এতটা ভালো কেন? ভারতকে কেন আইএমএফসহ অন্যান্য ঋণদানকারী সংস্থার কাছে হন্তদন্ত হয়ে ঋণের জন্য যেতে হচ্ছে না?
আমাদের মধ্যে যাঁরা কিছুটা সচেতন, কিছুটা খোঁজখবর রাখেন, তাঁরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটের জন্য সরকারের দেওয়া বয়ানকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। মানুষ এটা বোঝেন, করোনা মহামারি, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন এবং বিশ্বে মন্দা পরিস্থিতি নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের অর্থনীতিকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের অর্থনীতি যে আজকের একেবারে ভেঙে পড়ার পরিস্থিতিতে চলে গেছে, সেটার মূল কারণ আমাদের দেশে দীর্ঘদিন ধরে চলা অপশাসন, লুটপাট এবং সর্বোপরি লুটপাটকৃত টাকা পাচার হওয়া।
সাম্প্রতিক সময়ে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে থেকেও রিজার্ভ সংকটের জন্য টাকা পাচারের বাস্তবতা স্বীকার করা হচ্ছে। গত ১৭ নভেম্বর অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) আয়োজিত এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনবিষয়ক জাতীয় সেমিনারে আর্থিক খাতের অবস্থার ওপর বক্তৃতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি তদন্তে দেখা গেছে, চলতি বছরের শুরু থেকে দেশে অস্বাভাবিক আমদানির পরিমাণ ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি বেড়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর আমদানি করা পণ্য যাচাই-বাছাইয়ের পর ৫ বিলিয়ন ডলারের আমদানি কমেছে, যা স্বাভাবিক। তিনি বলেন, ‘তদন্তে আমরা দেখেছি, কিছু পণ্য ২০ থেকে ২০০ শতাংশ ওভার ইনভয়েসিং দিয়ে আমদানি করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা যাচাইয়ের কারণে আমদানির পরিমাণ কমে গেছে।’ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর একই ধরনের কথা আবার বলেছেন ১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সম্মেলনে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের আগে পাচার-সংক্রান্ত তথ্য উদ্ঘাটন এবং সেটা প্রতিরোধে কাজ করার দায়িত্বপ্রাপ্ত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) জানিয়েছিল, ২০০% পর্যন্ত আমদানি মূল্য বেশি দেখিয়ে অর্থ পাচার করা হয়েছে (ওভার ইনভয়েসিং)। বিএফআইইউ প্রতিনিধি আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের কথা বলেনি। কিন্তু আমরা জানি বাংলাদেশের বহু রপ্তানিকারক প্রকৃত রপ্তানি মূল্যের অনেক কম দেখিয়ে রপ্তানিকৃত পণ্যমূল্যের চাইতে অনেক কম টাকা দেশে নিয়ে আসছেন। এভাবে আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমে শুধু বিরাট অঙ্কের ডলার পাচার হয়েছে।
প্রশ্ন হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান থেকেই যখন ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাচার নিয়ে কথা হচ্ছে, তখন আদতে কি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় এই দেশে?
গত বছরের জুন মাসে ‘বিএফআইইউর প্রতিবেদন: পাঁচ বছরে প্রমাণ মিলেছে অর্থ পাচারের ১০২৪ ঘটনা’ শিরোনামে প্রথম আলোতে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, তার আগের পাঁচ বছরে টাকা পাচারের ১ হাজার ২৪টি ঘটনার প্রমাণ পায় বিএফআইইউ। এ প্রতিবেদনেই জানা যায়, উদ্ঘাটিত ঘটনাগুলো সম্পর্কে প্রতিষ্ঠানটি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের (দুর্নীতি দমন কমিশন, বাংলাদেশ পুলিশ, পুলিশের সিআইডি, কেন্দ্রীয় ব্যাংক) কাছে তথ্য পাঠিয়েছে। এবং এরপর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘তবে তথ্য-প্রমাণ থাকার পরও এসব ঘটনায় কোনো সংস্থা খুব বেশি ব্যবস্থা নেয়নি।’ শেষের বাক্যটি না থাকলেও আমরা নিশ্চয়ই বুঝতে পারতাম উদ্ঘাটিত ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে আসলে কী হয়েছে।
দেশের অর্থনৈতিক সংকটের ক্ষেত্রে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের আদৌ কোনো সদিচ্ছা, এমনকি এ সংকটময় পরিস্থিতিতেও আছে কি না, সেটা বোঝা যাবে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ খবরের দিকে দৃষ্টি দিলে। কয়েক মাস আগে বাংলাদেশের রিজার্ভের পরিমাণ নিয়ে বিতর্কের প্রেক্ষাপটে সাধারণ মানুষও জানতে পেরেছেন, রিজার্ভ থেকে সরকার ৮ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছিল।
বাংলাদেশের মতো দেশের, যাকে চাল-গমের মতো প্রধান খাদ্যশস্য বিরাট পরিমাণে আমদানি করতে হয়, তার এভাবে রিজার্ভের অর্থ খরচ করা উচিত হয়েছিল কি না, সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। সেই প্রশ্ন সরিয়ে রেখে আমরা এই কলামের আলোচনার প্রসঙ্গে দেখি সেই অর্থের পরিণতি ঠিক কী হয়েছে? রিজার্ভ থেকে ব্যয় করা অঙ্কের মধ্যে সবচেয়ে বড় খাতটি ছিল রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলে (এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড, ইডিএফ) ৭ বিলিয়ন ডলার দেওয়া।
‘প্রভাবশালীদের ক্ষমতা বুঝল কেন্দ্রীয় ব্যাংক’ শিরোনামে ২৭ জুলাই প্রথম আলোর একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের ইডিএফ নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নেওয়া যাক। সেই প্রতিবেদনে জানা যায়, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে রাষ্ট্রমালিকানাধীন জনতা ব্যাংকের প্রধান তিন শাখার বৈদেশিক ঋণ কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক যেসব কারণে ব্যাংকটির তিন শাখার বৈদেশিক ঋণ কার্যক্রম বন্ধ করে তার মধ্যে অন্যতম হলো, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত নতুন ১০ হাজার ২৮০ কোটি টাকা ঋণের ৮৪ শতাংশই সৃষ্টি হয়েছে নন-ফান্ডেড দায় থেকে। অর্থাৎ, ব্যাংকটি ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্র খুলে বা রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল থেকে যে ঋণ দিয়েছে, তার দায় বৈদেশিক মুদ্রায় শোধ করেননি গ্রাহকেরা। ফলে ব্যাংকটি বাধ্য হয়ে ওই গ্রাহকের নামে টাকা ঋণ সৃষ্টি করেছে। ব্যাংকটির এমন ঋণের পরিমাণ ১০ হাজার ৩০ কোটি টাকা।
ঋণ কার্যক্রম স্থগিতের চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, এসব ঋণ স্বাভাবিক ব্যাংকিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সৃষ্টি হয়নি। রপ্তানি মূল্য প্রত্যাবাসন না হওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এবং এই প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে অর্থ পাচার হওয়ায় ঝুঁকি রয়েছে। ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল বা ইডিএফ থেকে দেওয়া ঋণের বিপরীতে রপ্তানি আয় প্রত্যাবাসন হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত না হয়েই বারবার একই গ্রাহককে ইডিএফ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে ইডিএফ-সুবিধার অপব্যবহার করা হয়েছে।
কিন্তু এ তথ্যে অটল থাকতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। মজার ব্যাপার, প্রথম আলো প্রতিনিধি এই স্থগিতের খবর পেয়ে যখন জনতা ব্যাংকে যান, তখন সেখানকার কর্মকর্তারা প্রতিবেদককে বলেন, এই সিদ্ধান্ত দুই দিনও বহাল রাখতে পারবে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দুই দিন না, বরং দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা হতেই এই পূর্বাভাস সত্য হয়ে ওঠে, বৈদেশিক ঋণ কার্যক্রম স্থগিতের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। বৈদেশিক মুদ্রার চরম সংকটের সময় বৈদেশিক মুদ্রার নয়-ছয় করা বন্ধ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এর সঙ্গে আরও দুটি তথ্য আমরা যোগ করে কলামের উপসংহারে আসব।
বাংলাদেশ থেকে পাচারকৃত অর্থের অঙ্ক খুব বড় না হলেও টাকা পাচারকারীদের টাকা সুইস ব্যাংকে জমা করা হয়। সুইস ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এখন স্বতঃপ্রণোদিতভাবে কোন দেশের মোট কত টাকা জমা আছে, সেটা নিয়মিত বিরতিতে জানায়। সেই সূত্রে আমরা জানতে পারি, বাংলাদেশিরা মোট কত টাকা জমা করেছেন সেখানে। কিন্তু আমরা কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেতে পারি না। ২০১৭ সাল থেকে অটোমেটিক এক্সচেঞ্জ অব ইনফরমেশন (এইওআই) নামক কাঠামোর আওতায় নিজ দেশে কর ফাঁকি দিয়ে সুইস ব্যাংকে অর্থ জমা রাখলে তার তথ্য দিতে বাধ্য থাকে সুইস ব্যাংকগুলো। এ কাঠামোতে স্বাক্ষরকারী ১২১ দেশের মধ্যে ভারত, মালদ্বীপ, এমনকি পাকিস্তান থাকলেও নেই বাংলাদেশ।
বর্তমানে বাংলাদেশে টাকা পাচার নিয়ে গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটি (জিএফআই) বেশ পরিচিত নাম। জিএফআই টাকা পাচারের হিসাবের জন্য ব্যবহার করে জাতিসংঘে দেশগুলোর দেওয়া আমদানি-রপ্তানিসংক্রান্ত ডেটা। প্রতিষ্ঠানটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে অন্য সব দেশের ক্ষেত্রে হালনাগাদ ডেটার ভিত্তিতে তথ্য দিলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেটা পারেনি। তারাই জানিয়েছে, ২০১৫ সালের পর থেকে বাংলাদেশ জাতিসংঘে আমদানি-রপ্তানিসংক্রান্ত ডেটা দেয়নি।
দীর্ঘদিন থেকে এই দেশে বিপুল অঙ্কের অবৈধ অর্থ তৈরি হচ্ছে। চরম সংকটের সময়ও আমরা দেখতে পাই, শুধু নভেম্বর মাসেই কীভাবে ইসলামী ব্যাংক থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা ঋণের নামে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সংকটময় সময়েও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর যখন ব্যাংকিং চ্যানেলের টাকা পাচার নিয়ে কথা বলেন, তখনো টাকা পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা দেখা যায় না। এমনকি দু-একটি ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা থাকলেও, সেটা কার্যকর করা যায় না।
কিছু অর্থনীতিবিদ বাংলাদেশকে ক্রনি ক্যাপিটালিজম (স্বজনতোষি পুঁজিবাদ) দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেন। প্রথম আলোতে আমি আমার আগের কিছু লেখায় বলতে চেয়েছি যে, বাংলাদেশ এই পর্যায়ে পেরিয়ে গেছে অনেক আগেই। বাংলাদেশ এখন একটি পুরোমাত্রার ক্লিপ্টোক্রেসি (তস্করতন্ত্র)।
এখানে শাসকগোষ্ঠী আর লুটেরারা মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। তাই সরকার এদের ক্ষেত্রে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে চাইবে না, চাইলেও পারবে না। কারণ, তাঁরা সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
অনুমান করি, সরকার চাইবে সর্বতোভাবে কিছু ব্যবস্থা নিয়ে আগামী নির্বাচনের আগে পরিস্থিতি সামাল দিতে। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে দেশের অর্থনীতিকে সঠিক ভিত্তির ওপর পুনঃস্থাপন করার সক্ষমতা বা ইচ্ছা কোনোটাই সরকারের আছে বলে মনে হয় না। ক্লিপ্টোক্রেসিতে এটা হওয়াই স্বাভাবিক।
***** জাহেদ উর রহমান ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের শিক্ষক।
সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:ডিসেম্বর ০৫, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,