বুলডোজ়ার, ক্রেন এনে ৩২ নম্বর ধানমন্ডি গুঁড়িয়ে দিয়েও রোষ মেটেনি বাংলাদেশের বিক্ষোভকারীদের। বুধবার রাত থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়ে গিয়েছে উন্মত্ত জনতার হামলা। নিশানায় জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর কন্যা হাসিনা-সহ আওয়ামী লীগের নেতারা। ভাঙচুর অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি চলছে দেদার লুটপাটও!
ধানমন্ডির ৫/এ-তে হাসিনার বাড়ি সুধা সদনেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বুধবার রাতে। প্রত্যক্ষদর্শীরা ‘প্রথম আলো’কে জানান, রাতে সাড়ে ১০টার পরে ধানমন্ডিতে হাসিনার বাসভবনে আগুন ধরিয়ে দেন কয়েক জন। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত আগুন জ্বললেও হামলার আশঙ্কায় তা নেভাতে যাননি দমকলকর্মীরা! রাজধানী ঢাকার অদূরে সাভারের জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বুধবার রাতে বঙ্গবন্ধু মুজিব এবং হাসিনার ম্যুরাল ভেঙে দেন একদল বিক্ষোভকারী। সেখানকার আল বেরুনী হলের দেয়ালে আঁকা বঙ্গবন্ধুর গ্রাফিতিও রং দিয়ে মুছে দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা।
রাত থেকেই ঢাকার বাইরেও ক্রমশ ছড়াতে শুরু করে হাসিনা-বিরোধী রোষ। খুলনার ময়লাপোতা এলাকায় ভেঙে দেওয়া হয়েছে ‘শেখ বাড়ি’। সেটি ছিল হাসিনার কাকার বাড়ি। বুধবার রাতে সিটি করপোরেশনের দু’টি বুলডোজ়ার নিয়ে বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়া শুরু হয়। কুষ্টিয়ায় বুলডোজ়ার চলেছে প্রাক্তন আওয়ামী লীগ সাংসদ মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়িতে। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে হামলাকারীদের দাবি, আওয়ামী লীগকে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করতে হবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি আবাসিক হল ও একটি স্কুলের নামফলক ভেঙে নতুন নামকরণ করেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে ‘বিজয়-২৪ হল’, নির্মাণাধীন শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামান হলের পরিবর্তে ‘শহিদ আলি রায়হান হল’, শেখ হাসিনা হলের পরিবর্তে ‘ফাতিমা আল-ফাহরিয়া হল’ এবং শেখ ফজিলাতুন্নেসা হলের পরিবর্তে ‘নবাব ফয়জুন নেসা চৌধুরানী’ নাম দিয়ে ব্যানার ঝুলিয়ে দেন তাঁরা। এ ছাড়া শেখ রাসেল মডেল স্কুলের নাম পরিবর্তন করে ‘রিয়া গোপ মডেল স্কুল’ করা হয়।
বুধবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ভোলা সদরের গাজীপুর সড়কে ‘প্রিয় কুটির’ নামে একটি বাড়িতে আগুন ধরানো হয়। এটি আওয়ামী লীগ নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের বাড়ি। ৫ অগস্টে পালাবদলের পরে অবশ্য আর ভোলার ওই বাড়িতে যাননি তোফায়েল। রাত ১টা নাগাদ কুমিল্লার মুন্সেফবাড়ি এলাকায় প্রাক্তন সাংসদ বাহাউদ্দীন বাহারের বাড়িতেও ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয় বলে অভিযোগ। পিরোজপুরে জাতীয় সংসদের প্রাক্তন সদস্য একেএমএ আউয়াল এবং তাঁর ভাই তথা মেয়র হাবিবুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয় উন্মত্ত জনতা।
সূত্র:আনন্দবাজার পত্রিকা।
তারিখ: ফেব্রুয়ারী ০৬, ২০২৫
রেটিং করুনঃ ,